স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের শর্ত পূরণ না করায় দেশের ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি); যেগুলোর মধ্যে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে৷
বৃহস্পতিবার ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক শামসুল আরেফিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণবিজ্ঞপ্তি জারির কথা জানানো হয়।
এর আগে চলতি বছরের শুরুতে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইউজিসি, যা বৃহস্পতিবার গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সবাইকে জানানো এবং সতর্ক করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ইউজিসির নির্ধারণ করে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এগুলোতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে স্টেট ইউনিভার্সিটি ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে।
স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণে অগ্রগতি বিবেচনায় আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় পেয়েছে- ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি।
এসময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ১ এপ্রিল থেকে এসব বিশ্বিবিদ্যালয়েও নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। সেইসঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া সব অস্থায়ী ক্যাম্পাস অবৈধ বিবেচিত হবে বলেও গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণে অগ্রগতি এবং লিখিত অঙ্গীকার বিবেচনায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জুলাই থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া সব অস্থায়ী ক্যাম্পাস অবৈধ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যাপারে নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাময়িক সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ ও স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়নি এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গত বছরের ১১ এপ্রিল ও ৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেয় ইউজিসি।
স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ১ জানুয়ারি থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে বলে ওই চিঠিতে জানানো হয়েছিল।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছরের মধ্যে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আইনের ১২(১) ধারায় বলা আছে, “কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করিতে ব্যর্থ হইলে, অথবা সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য ধারা ৯ এর কোন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হইলে, উক্ত সাময়িক অনুমতিপত্র বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ করিতে হইবে।”
দেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন রয়েছে। গত এক বছরে ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে গেছে বলে গত ৪ জানুয়ারি ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ওমর ফারুখ জানিয়েছিলেন।