আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমা মাত্রই দেশে যাতে মূল্য সমন্বয় করা হয় তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সামীর সাত্তার।
তিনি বলেছেন, “জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি কেবলমাত্র একমুখী হওয়া উচিত হবে না বরং আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্য হ্রাস পেলে কালক্ষেপণ না করে- সে অনুপাতে স্থানীয় বাজারেও যেন জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।”
শনিবার ঢাকার মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে সংগঠনের ২০২৩ সালের কর্মপরিকল্পনা জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন।
এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনের সংশোধনী সংসদে পাস হলে প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে নীতিমালা হবে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ শতাংশ বাড়ানোর এক সপ্তাহ পর গত ১৮ জানুয়ারি সরকার নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম বাড়ায়।
দাম বাড়ানোর ব্যাখ্যায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করে বর্ধিত চাহিদা মেটাতে হবে। সে কারণে সরকার বিদ্যুৎ, শিল্প, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে উৎপাদন খরচ বাড়লে প্রতিযোগিতায় কারখানাগুলো টিকতে পারবে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, “দেশের ব্যবসায়ী সমাজ শিল্পখাতে পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উচ্চমূল্যে হলেও নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে চায়, যেন স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়।
“এটা সত্য যে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উপর কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, কারণ এটি তাদের পণ্য উৎপাদন ব্যয় বাড়াবে।”
তিনি বলেন, “জ্বালানির দর বৃদ্ধির প্রভাব ছোট, মাঝারি ও বড় শিল্পে ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব ফেলবে। কেউ কাটছাঁট করে মুনাফা কমিয়ে আনবে, কেউবা কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনবে। এটি নির্ভর করবে প্রত্যেকটা কোম্পানির নিজস্ব সক্ষমতা ও কৌশলের উপর।”
বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রভাব শিল্পে দেখতে হলে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
জ্বালানি খাতে দর বাড়ানোর আগাম পরিকল্পনার প্রয়োজন মন্তব্য করে সামীর সাত্তার বলেন, “একটি ভবিষ্যতমুখী পরিকল্পনার মাধ্যমে দর বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এটি জানা থাকলে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা সাজাতে সুবিধা হয়। আমরা বুঝতে পারব কখন কোন কোন খাতে খরচ বাড়বে, তা কীভাবে সমন্বয় করা যাবে।”
প্রতি বছর নতুন করে ২০ লাখ শিক্ষিত জনশক্তি চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে। চলমান পরিস্থিতিতে তাদের কর্মসংস্থান সম্ভব হবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “চাকরির বিকল্প স্টার্টআপ করাকে অনেক তরুণ পছন্দ করছে। আমাদের উচিত হবে তাদের অর্থায়ন সহজ করা। এখন নতুনদের কর্মসংস্থানের চেয়ে বর্তমানদের চাকরি ধরে রাখাটাই হবে এক ধরনের সফলতা।”
এসময় ডিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ সভাপতি জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।