Loading...

কথায় কথায় বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না, দেশে ভালো চিকিৎসা হয়: প্রধানমন্ত্রী

| Updated: June 30, 2022 19:15:07


কথায় কথায় বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না, দেশে ভালো চিকিৎসা হয়: প্রধানমন্ত্রী

মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ‍সৃষ্ট বৈশ্বিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে সবাইকে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের দিকে নজর দেওয়া তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার জাতীয় সংসদে বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি ব্যয় কমানোর নানা পদক্ষেপ তুলে ধরার পাশাপাশি নাগরিকদের এ পরামর্শ দেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

সরকার প্রধান বলেন, “কথায় কথায় বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না। কারণ দেশে ভালো চিকিৎসা হয়।”

শেখ হাসিনা বলেন, “সঞ্চয় করতে হবে। প্রত্যেকের নিজস্ব সঞ্চয় বাড়ানো এবং প্রত্যেককে মিতব্যয়ী হতে হবে।

“আপনারা বিদ্যুৎ ঢালাওভাবে ব্যবহার করবেন না, পানি ঢালাওভাবে ব্যবহার করবেন না। অপচয় যেন না হয়। সকলেই কিছুটা কৃচ্ছ্র সাধন করে, কিছুটা সঞ্চয় করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন।”

ব্যক্তিগত পর্যায়ে সঞ্চয় বাড়ানোর মাধ্যমে জাতীয় সঞ্চয় নীতিতেওে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সকল প্রকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয় তথা অপচয় কমানো, আমদানিকৃত বিলাসদ্রব্য ক্রয় পরিহার করে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনায় মনোযোগ দিতে হবে।”

সবাইকে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের দিকে নজর দেওয়া তাগিদ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “কথায় কথায় বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না। কারণ দেশে ভালো চিকিৎসা হয়।”

ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজার অস্থির গত কয়েক মাস ধরেই। এই পরিস্থিতিতে প্রায় সব পণ্যের দামই বেড়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধকে বাংলাদেশের জন্য ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “যে সমস্ত জিনিস বিশেষ করে আমাদের আমদানি করতে হয়, যেমন জ্বালানি তেল, গম, ভোজ্য তেল, এলএনজি, প্রত্যেকটার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জাহাজের ভাড়াও বৃদ্ধি পেয়েছে।”

নয়টি পণ্য একই পরিমাণ আমদানিতে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তবে এই প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যেখানে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে, আমরা আমাদের উন্নয়নের গতিশীলতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করি।”

মূল্যবৃদ্ধি জনগণের উপর যে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে, সে কারণে সরকারের ভর্তুকি বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন তিনি।

“সার, বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাসে আমাদের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। কেবল আন্তর্জাতিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে আগামী অর্থ বছরে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার, বিদ্যুৎ খাতে যে ঘাটতি হবে, তার মূল্য বাড়িয়ে ভোক্তা পর্যায়ে শতভাগ চাপিয়ে দেব না। যার ফলে আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি ব্যয় বাড়বে।”

এই সময়ে আমদানি ব্যয় বাড়লেও তাতে সঙ্কটের চেয়ে সম্ভাবনাই বেশি দেখতে পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমি মনে করি, আমরা যেহেতু বেশিরভাগই ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি করেছি, সেগুলো যখনই স্থাপন হবে, শিল্প চালু হবে, তার থেকে আমাদের দেশ লাভবান হবে।

“এটা করতে গিয়ে আমাদের হয়ত ডলারে কিছুটা টান পড়েছে। কিন্তু সেটা এখনও আমি মনে করি আশঙ্কাজনক কোনো বিষয় নয়। কাজেই এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।”

কোভিড মহামারী মোকাবেলায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “জনগণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেছে বলেই মৃত্যুর হার আমরা অনেক কম রাখতে পেরেছি।”

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য যে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট সরকার প্রস্তাব করেছে, জনগণের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়নের আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এই প্রসঙ্গে পদ্মা সেতুর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশে-বিদেশের সব বাধা অতিক্রম করে সব অসম্ভবকে আমরা সম্ভব করছি। তার কারণ আমাদের দেশের মানুষ, তাদের কিন্তু আলাদা শক্তি আছে। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হয়েছে।

“সেজন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই। কারন তাদের সাহসটাই ছিল আমার একমাত্র সম্বল।”

Share if you like

Filter By Topic