সেনা শাসিত মিয়ানমারে গত বছর আফিম চাষ ৩৩ শতাংশ বেড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সংঘাতে বিপর্যস্ত দেশটিতে ছয় বছর নিম্নমুখী ধারায় থাকার পর পরিস্থিতি উল্টে গেছে বলে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনটি বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক কার্যালয়ের (ইউএনওডিসি) এক কর্মকর্তা বলেছেন, দুই বছর আগে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে, তার সঙ্গে এই আফিম চাষবৃদ্ধির ‘সরাসরি সম্পর্ক’আছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
“২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা নেওয়ার পর অর্থনৈতিক, নিরাপত্তাজনিত এবং শাসনতান্ত্রিক সংকট এক বিন্দুতে মিলেছে; তাই দূর-দূরান্ত, সংঘর্ষপ্রবণ এলাকার কৃষকদের আফিম চাষে ফেরা ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকেনি,” বলেছেন ইউএনওডিসির আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস।
এ প্রসঙ্গে বার্তা সংস্থা রয়টার্স মিয়ানমারের সামরিক জান্তার এক মুখপাত্রের মন্তব্য চেয়ে যোগাযোগ করলেও তিনি সাড়া দেননি।
অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারের অর্থনীতি ক্রমশ নিচের দিকে নামছে; ডলারের বিপরীতে কিয়াত (মিয়ানমারের মুদ্রা) আরও দুর্বল হচ্ছে, খাদ্য ও জ্বালানির দাম ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।
“বিকল্প এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া আফিম চাষ এবং উৎপাদন ক্রমে বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে,” সতর্ক করে বলেছেন ইউএনওডিসির মিয়ামারের কান্ট্রি ম্যানেজার বেনেডিক্ট হফম্যান।
২০২২ সালে আফিম চাষ করা জমির পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশ বেড়ে ৪০ হাজার ১০০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে, গড় আনুমানিক ফলনও হেক্টরপ্রতি ৪১ শতাংশ বেড়ে ২০ কেজিতে পৌঁছেছে; ইউএনওডিসি ২০০২ সাল থেকে তথ্য নেওয়া শুরুর পর এখন পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ, বলছে জাতিসংঘের প্রতিবেদন।
এর মধ্যে চীন, থাইল্যান্ড ও লাওসের সঙ্গে সীমান্ত থাকা মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য শানে আফিম চাষ সবচেয়ে বেশি ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।
২০২১ সালের প্রতিবেদনে চাষকৃত এলাকা বের করতে মূলত উপগ্রহের তথ্যের উপর নির্ভর করতে হয়েছিল।
মিয়ানমারে বিপুল পরিমাণ আফিম উৎপাদিত হয়, কোনো কোনো বছর এর মূল্য ২০০ কোটি ডলারেও পৌঁছায়; এরপর এই মাদক প্রতিবেশী দেশগুলোর মাধ্যমে বিশ্ববাজারে পৌঁছায়, বলছে জাতিসংঘের প্রতিবেদন।