বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যাওয়া আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম ভোটিং মেশিন ইভিএমের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সরকার তাকে ভয় পায় বলেও মনে করেন তিনি।
ফলাফল বাতিলে উচ্চ আদালতে যেতে নন্দীগ্রাম উপজেলার ১১২টি কেন্দ্রের ফলাফল আনতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন অফিস যান তিনি। সেখানে এসব কথা বলেন তিনি।
ফলাফল বাতিলে উচ্চ আদালতে যাবেন সেই কারণে কাগজ নিতে এসেছেন বলে হিরো আলম জানান। পরে তিনি সাংবাদিক এবং নির্বাচন অফিসের সবাইকে মিষ্টি খাওয়ান।
এ সময় হিরো আলমকে জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুব হাসান জানান, প্রথমে গেজেট হওয়ার এক মাসের মধ্যে আপনাকে নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। আগেই উচ্চ আদালতে যাওয়া যাবে না।
হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বিজয়ী, আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সরকারের সময় সুষ্ঠু ভোট আশা করা যায় না। আশ্চর্যের বিষয় হিরো আলমকে দেখে তারা ভয় পায়। ভোটাররাও এটা মেনে নিতে পারছে না।”
ইভিএম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “মারবে একজায়গায় যাবে অন্য জায়গায়। ইভিএমও সঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, বগুড়া-৬ আসনেও ভোট সঠিক হয়নি। সঠিক ভোট হলে আওয়ামী লীগ জীবনেও বগুড়ার এই আসনে জিততে পারবে না। সদরে অনেক কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ এজেন্ট ঢুকতে দেয়নি।
“আসলে আমাকে একটি মহল মেনে নিতে পারছে না। কারণ, আমি দেখতে সুন্দর না, চেহারা ভালো না, লেখাপড়া কম। আমি সংসদে গেলে নাকি ইজ্জত যাবে। এ কারণে এবার দিয়ে দুইবার আমার মনোনয়ন বাতিল করা হলো। হাইকোর্ট থেকে মনোনয়ন ফিরে আনতে হলো।”
হিরো আলম বলেন, “শিক্ষিতরাও মানুষ, আমিও মানুষ। আমার মত লোকদের হেয় করবে এটা কোন শিক্ষা? যদি আমার মত মানুষ সংসদে গেলে লজ্জা হয় কিছু লোকের, তাহলে আইন করে বাতিল করা হোক। আমাদের মত মানুষ যেন ভোটে না দাড়াতে পারে।”
এক শতাংশ ভোটের আইন নিয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন জানিয়ে হিরো আলম আরও বলেন, “আমি যে ভোট পেয়েছি তা আমার দেওয়া এক শতাংশ ভোটের চেয়ে বেশি। তাহলে এ বিধানের অর্থ কি দাঁড়াল? এটা বাতিল করা জরুরি।”
হিরো আলম বলেন, “আমাকে আওয়ামী লীগ, জাসদ, প্রশাসন সবাই হারিয়েছে। কারণ, ফলাফল ঘোষণার আগে নন্দীগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন মশাল জিতেছে, শুধু ঘোষণার অপেক্ষা। আর জাসদের তানসেনের ফলাফল ঘোষণার আগেই ফুলের মালা পড়ে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে।”
হিরো আলম ২০১৮ সালে তিনি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচন করে জামানত হারিয়েছিলেন। এবার ‘ভোটারদের চাওয়ার মুখে’ বগুড়া-৬ (সদর) আসনেও প্রার্থী হন।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা ফিরে না পেয়ে উচ্চ আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান হিরো আলম। পরে একতারা নিয়ে ভোটের মাঠে নামেন।
হিরো আলম বগুড়া-৪ আসনে আওয়ামী জাসদ প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন এবং বগুড়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগের রাগেবুল আহসান রিপুর কাছে হেরে যান। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।