ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষযাত্রা সরাসরি দেখতে লন্ডনের রাস্তার পাশে জড়ো হওয়া হাজারো মানুষ শোক আর হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে তাকে বিদায় জানিয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাত থেকেই রাস্তার পাশে তাঁবু টানিয়ে মানুষজন অপেক্ষায় ছিল রানির শেষযাত্রা দেখার জন্য। কেউ এনেছিলেন স্লিপিং ব্যাগ আবার কেউ ফোলানো বিছানা এমনকি ফ্লাস্কভর্তি চা নিয়ে এসেছিলেন কেউ কেউ। শোকযাত্রা ভালোভাবে দেখা যাবে এমন জায়গা খুঁজে পেতে অনেকে সেখানেই রাত কাটিয়েছেন।
লন্ডন এবং উইন্ডসরের রাস্তায় সোমবার লাইন ধরে দাঁড়িয়ে রানির শেষযাত্রা দেখছেন তারা। জানাচ্ছেন ভালোবাসা। অনেকেই রানিকে নিয়ে জানিয়েছেন নিজেদের অনুভূতির কথা।
নটিংহাম থেকে আসা ক্যামিলা মূর বলেন, “এইমাত্র যা দেখলাম তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এ দৃশ্য সত্যিই বিশেষ এবং স্মরণীয়।”
নর্থ ইয়র্কশায়ারের অবসরপাপ্ত সেনা কলিন স্যান্ডারস বলেন, “ঘরে বসে এই দৃশ্য দেখার চেয়ে এখানে এসে আমার মনে হচ্ছে যেন আমিও এর অংশ।”
“আমি খুবই আপ্লুত। তিনি (রানি) আপনার মাতামহের মত। খুবই ভাল লাগার এবং যত্নশীল মানুষ। তিনি বলেছিলেন দেশের সেবা করবেন এবং তা তিনি করেছেনও।”
নার্স বেন ভেগা বলেন, “আজ আমার জন্য খুবই দুঃখের দিন। এখানে আমি ২০ বছর ধরে আছি। আমি রানিকে আমার আরেক মা হিসাবেই দেখতাম। ইংল্যাণ্ড আমার দ্বীতিয় বাড়ি।”
লন্ডনের আরেক নার্স অ্যালেকজান্দ্রা স্টিভেনসন বলেন, “প্রত্যেকের মতো ইতিহাসের অংশ হওয়ার জন্যই আমি এখানে।”
লন্ডনের ভিকি ম্যাককনকি বলেন, “আমার সারাজীবন ধরেই তিনি (রানি) এখানে ছিলেন। আমি মূলত রাজপরিবার নিয়ে পাগল নই। তবে আমি রানিকে পছন্দ করি। তার এই শেষযাত্রা আমি মিস করতে চাই না।”
কেন্ট থেকে রয়্যাল ইঞ্জিনিয়ার্সে কাজ করা প্রবীণ মারিও রেইড বলেন, “আমরা তাকে (রানি) বস বলে সম্বোধন করি। আমি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি।”
রেলওয়ে কর্মী ক্রিগ চাম্বারস বলেন, “রানি এতগুলো বছর যে শাসনকাজ চালিয়েছেন তার জন্য আমার অজস্র শ্রদ্ধাঞ্জলী। আমি ইতিহাসের অংশ হতে চাই।”
কেন্ট থেকে আসা অ্যালিসন করনিশ বলেন, “আমরা এখানে এসে এই ঐতিহাসিক শবযাত্রা দেখতে চেয়েছিলাম। এর অংশ হতে চেয়েছি, রানিকে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছি এবং তার আজীবন সেবার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চেয়েছি।”
সাসেক্স থেকে আসা অ্যাবি ফক্স বলেন, “তিনি (রানি) দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, করেননি কী? আর প্রতিদানে তিনি কিছুই চাননি।”
লন্ডনের ক্যারল জোসেফ বলেন, “তিনি (রানি) চমৎকার। এত মর্যাদাপূর্ণভাবে, শ্রদ্ধার সঙ্গে তিনি নিখুঁতভাবে শাসন করে গেছেন। তার কখনোই কোনওকিছু ছিল না, তার কোনও কেলেঙ্কারি ছিল না। এ শ্রদ্ধা তার প্রাপ্য।"