পেরুতে জরুরি অবস্থা জারি


এফই অনলাইন ডেস্ক | Published: December 15, 2022 18:14:44 | Updated: December 16, 2022 18:10:22


পেরুতে জরুরি অবস্থা জারি

নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেদ্রো ক্যাস্তিয়োকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সপ্তাহখানেক ধরে চলা সহিংসতায় আট জন নিহত হওয়ার পর পেরুজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

২০২১ সালের নির্বাচনে জয়ী বামপন্থি ক্যাস্তিয়োকে বেআইনিভাবে দেশের পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার করার পর এ সহিংসতা শুরু হয়।

বুধবার পেরুর কৌঁসুলিরা বিদ্রোহ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ক্যাস্তিয়োকে বিচারপূর্ববর্তী দেড় বছরের আটকাদেশ দেওয়ার আবেদন করেছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

সুপ্রিম কোর্ট এ আবেদনের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করলেও পরে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতুবি করে দেয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ক্যাস্তিয়ো ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার ভাইস প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেও লাতিন আমেরিকার অনেক দেশই এভাবে ক্ষমতার রদবদলকে ভালো চোখে দেখছে না।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে আন্দিজ এ দেশটিতে প্রায়ই বিক্ষোভ ও সহিংসতার দেখা মেলে, বিশেষ করে গ্রামীণ ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোতে। ওই অস্থিতিশীলতার মধ্যেই গত বছর নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হন একসময় কৃষিকাজ ও পরে শিক্ষকতা করা ক্যাস্তিয়ো।

তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহত ৮ জনের মধ্যে অধিকাংশেই কিশোর বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

নিহতদের মধ্যে ৬ জনই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।

বিক্ষোভকারীরা একাধিক মহাসড়ক আটকে, ভবনে আগুন দিয়ে, বিমানবন্দর সাময়িক সময়ের জন্য দখলে নিয়ে ক্যাস্তিয়োর অভিশংসন ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

“ধ্বংসযজ্ঞ ও সহিংসতার কারণে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারির ব্যাপারে একমত হয়েছি আমরা। যা চলছে, তাতে সরকারের দিক থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দরকার,” সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন বলুয়ার্তের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলবার্তো ওতোরালো।

জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার অর্থ হচ্ছে, সভা-সমাবেশ করাসহ একাধিক অধিকার বাতিল, চলাফেরার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। এই অবস্থার বলে কর্তৃপক্ষ কোনো পরোয়ানা ছাড়া যে কারও বাড়িতে ঢুকে যাওয়ারও এখতিয়ার রাখে।

প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে বলুয়ার্তে বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, সহিংসতা চললে আলোচনা হতে পারে না।

তিনি আগামী বছরের ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজনেরও প্রতিশ্রুতি দেন। দিনকয়েক আগে তিনি ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন করার প্রস্তাব আনার আশ্বাস দিয়েছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, ক্যাস্তিয়োর বাকি মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে, সেই পর্যন্ত বলুয়ার্তের প্রেসিডেন্ট থাকার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক কোনো বাধা নেই।

বলুয়ার্তে সরকারের কর্মকর্তারা বুধবার অঞ্চলটির অন্যান্য দেশের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে তাদের সরকারের পক্ষে সমর্থন জোরদারের প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছেন। ক্যাস্তিয়োকে ক্ষমতাচ্যুত করা নিয়ে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের মতো অনেক বামপন্থি নেতাই তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

সরকারের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন পোক্ত করতে পেরুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনা সেসিয়া গারভাসি বুধবার চিলি, উরুগুয়ে, কোস্টারিকা ও একুয়েডরের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আগের দিন বলুয়ার্তে ইউরোপের অনেক দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন।

Share if you like