দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহর মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ৯টায় দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছালে একটি অশ্বারোহী দল তাকে স্বাগত জানিয়ে পথ দেখিয়ে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে নিয়ে যায়। বাংলাদেশের সরকারের সম্মানে জানানো হয় গান স্যালুট।
রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার দেয়। এ সময় বাজানো হয় দুই দেশের জাতীয় সংগীত।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেখানে উপস্থিত তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিচয় করিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার সঙ্গী মন্ত্রিসভার সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলেই তিনি আশা করছেন।
আমাদের মূল লক্ষ্য হল, জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে নিয়ে যাওয়া। আমরা সেটা করতে সক্ষম। বন্ধুত্ব দিয়ে যে কোনো সমস্যারই সমাধান করা যায়। আমরা সব সময় সেটাই করি।”
অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান শেষে শেখ হাসিনা যান রাজঘাটে। সেখানে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর হায়দ্রাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দুই নেতার নেতৃত্বে হবে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সহযোগিতার পাশাপাশি দুই দেশের অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো আলোচ্যসূচিতে প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতেই কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। কর্মসূচি শেষে মোদীর দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার ভারতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। শেখ হাসিনা এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে স্থল ও জলপথে যোগাযোগের ওপর জোর দেন।
ভারতের শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানিও সোমবার দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। আসছে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই ১৬০০ মেগাওয়াট গোড্ডা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ট্রান্সমিশন লাইন চালু করার প্রতিশ্রুতির কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বিকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
বুধবার সকালে ভারতের উন্নয়নমন্ত্রী কিষাণ রেড্ডি দেখা করবেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। এরপর বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসায়ী ফোরামের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্টুডেন্ট স্কলারশিপ’ প্রধান অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ সফরে সঙ্গী হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
ঢাকা ফেরার আগে বৃহস্পতিবার বিমানে জয়পুর যাবেন শেখ হাসিনা; সেখান থেকে যাবেন আজমির শরিফ জিয়ারত করবেন।