তিন দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ার, এই লম্বা সময়ে কি করেননি তিনি! ৮০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন, অস্কারসহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন, বক্স অফিস দখলে রেখেছেন দীর্ঘ সময়। সেই গুণী অভিনেতা টম হ্যাংকস মনে করেন, তার অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে কেবল মাত্র চারটি ‘ভালো সিনেমা’।
নিজের পছন্দের ওই চার সিনেমার নাম প্রকাশ করেননি এ অভিনেতা। অবশ্য এর আগে বিভিন্ন সময়ে তিনি নিজেই ‘ফরেস্ট গাম্পের’ কথা বলেছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
উইনস্টন গ্রুমের কাহিনী অবলম্বরে রবার্ট জেমেকিস ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করেন ফরেস্ট গাম্প। টম হ্যাংকস বলেছেন, তার প্রিয় ওই চরিত্রটি তাকে দিয়েছে অনন্য এক পরিচয়। কারণ এটি সাধারণ মানুষের অনুপ্রেরণা যোগানো একটি চরিত্র। সাদামাটা, কিন্তু অদ্ভুত আকর্ষণীয়। জীবনে যে যে রকম অবস্থানেই থাকুন না কেন, সেটা নিয়ে আশাবাদী হওয়ার বার্তা দেয় গাম্প।
৬৬ বছর বয়সী এই মার্কিন অভিনেতাকে বলা হয় ‘হলিউডেরই একটি অংশ’। ‘সেভিং প্রাইভেট রায়ান’, ‘ক্যাপ্টেন ফিলিপস’, ‘বিগ’, ‘কাস্টওয়ে’, ‘টয়’ স্টোরি’ ‘রোড টু পর্টিশন’, ‘দ্য গ্রিন মাইল’,’ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান’সহ মনে রাখার মত বহু সিনেমার সঙ্গে অভিনেতা টম হ্যাংকসের নাম উচ্চারিত হয়।
চলতি বছরই তিনি অভিনয় করেছে পপ আইনকন এলভিস প্রিসলির জীবনী নিয়ে বাননো ‘প্রিসলি’ সিনেমায়।
সিনে ম্যাগাজিন মুভিসওয়েব বলছে, খ্যাতি-সাফল্যের চাদরে মোড়ানো এমন জীবন নিয়েও টম হ্যাংকসের বিশ্বাস, তার মাত্র কয়েকটি সিনেমা ‘বেশ ভালো’, বাকি গুলো তেমন কিছু দাঁড়ায়নি।
হ্যাংকসের ‘দ্য ভিঞ্চি কোড’, ‘দ্য সার্কেল’, ‘ইনফার্নো’, এবং ‘অ্যাঞ্জেলস অ্যান্ড ডেমনস’ বিস্তর জনপ্রিয়তা পেলেও আশানুরূপ প্রশংসা আসেনি সমালোচকদের কাছ থেকে। তার সাম্প্রতিক কাজ ‘দ্য লাইভ-অ্যাকশন অ্যাডাপটেশন অব পিনোকিও’ বেশ সমালোচিতও হয়েছে।
‘ফরেস্ট গাম্প’ ও ‘ফিলাডেলফিয়া’ সিনোর জন্য দুবারের অস্কার জয়ী টম হ্যাংকস সম্প্রতি ‘দ্য মেকিং অব অ্যানাদার মেজর মোশন পিকচার মাস্টারপিস’ শিরোনামে একটি উপন্যাস লেখায় ব্যস্ত। আগামী বছর উপন্যাসটি প্রকাশের কথা রয়েছে। বইটি নিয়ে কথা বলার সময়ই নিজের সিনেমা নিয়ে ওই উপলব্ধির কথা জানান হ্যাংকস।
ওই বইয়ে সিনেমা তৈরির ভেতরের বাইরের রসায়ন হ্যাংকস তুলে ধরেছেন পাঠকের জন্য। তিনি মনে করেন, দর্শকদের সিনেমা তৈরির গল্প কিছুটা হলেও জানানো উচিত।
তার ভাষায়, “কেউ কিন্তু জানে না, সিনেমা কীভাবে তৈরি করা হয়, যদিও সবার একটা ভাব যেনে জেনেবুঝে বসে আছেন। আমি অনেকগুলোয় কাজ করেছি, কিন্তু এখনও ভাবতে অবাক লাগে একটি সিনেমা আসলে কীভাবে বানানো হয়! পুরা প্রক্রিয়াটি ‘মিরাকল’।“
এই অভিনেতার মতে সিনেমা তৈরি দারুণ কঠিন একটি কাজ। এই কাজে যেমন আনন্দ থাকে, তেমনি অনেক সময় নিজের উপর বিতৃষ্ণাও তৈরি হয়। এসবের পরও হ্যাংকস তার অভিনয় জীবনকে এখনও ভালোবাসেন।
হ্যাংকস জানিয়েছেন, সিনেমা তৈরিতে যুক্ত হওয়ার সময় ভবিষ্যতে ওই সিনেমার সিক্যুয়েল তৈরির জন্যে কোনো চুক্তিতে আবদ্ধ হন না তিনি, এবং আগামীতেও হওয়ার সম্ভাবনা নেই।