চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট টাওয়ার না থাকা এবং প্রচুর জ্যামার বসানোর ফলে নেটওয়ার্ক থাকলেও কল ড্রপ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের একটি সেশনে মতবিনিময়ের পর সাংবাদিকদের সামনে আসেন তিনি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “কল ড্রপ হওয়ার কিছু কারণ আছে। প্রথমত, যে পরিমাণ টাওয়ার থাকার কথা, নেই। টাওয়ারের সংযোগে ফাইবার ব্যবহার না করা, ফাইভ-জি চালু করতে হলেও অবশ্যই ফাইবার সংযোগ লাগবে।
“আরেকটা কারণ হচ্ছে জ্যামার; প্রচুর জ্যামার বসানোর ফলে নেটওয়ার্ক থাকলেও কল ড্রপ হয়। আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। আমরা প্রতিনিয়ত কোয়ালিটি অব সার্ভিস ইম্প্রুভের দিকে ফোকাস করছি।“
এ বিষয়ে পরে টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “জ্যামারগুলো আমাদের অনুমতি নিয়ে তো আসে না। দেশে স্মাগলিং যেভাবে হয়, সেভাবেই আসে, অবৈধভাবে। এসব জ্যামার উদ্ধার ও জব্দের লম্বা কাহিনি আছে। সারাদেশ থেকেই আমরা এগুলো উদ্ধার করছি।“
বিটিআরসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি গ্রাহকের অপারেটর গ্রামীণফোনে সবচেয়ে বেশি কলড্রপ হয়। এরপরে রয়েছে রবি ও বাংলালিংক। এ সমস্যা কাটাতে অপারেটরদের নেটওয়ার্ক উন্নয়নের তাগিদ দেওয়ার পাশাপাশি জরিমানারও ব্যবস্থা করা হয়েছে, তবে কল ড্রপ থেকে মুক্তি মেলেনি।
ডিসি সম্মেলনের পর ব্রিফিংয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, “আমাদের যারা টেলিকম অপারেটর আছেন, তাদের কলড্রপসহ অন্যান্য সমস্যা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি আমরা। কল ড্রপ নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা একটি পদক্ষেপ নিয়েছি। সেটি হলো প্রথম বার কল ড্রপে যে টাকা কাটা যাবে, গ্রাহক তার তিনগুণ ফেরত পাবেন।
“আপনি যদি দেখেন, ১৫ বছর আগে মানুষের চাহিদা ছিল সীমিত। তখন ফোনে একটা কল করতে পারলেই চলত। কিন্তু এখন প্রতিটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে, ভিডিও কল করে। চাহিদা বেড়েছে। এ জন্য আমরা অবকাঠামো উন্নতির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রযুক্তির পাশাপাশি অবকাঠামোও যাতে উন্নত হয় সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি।“
গত বছর বন্যায় নেটওয়ার্ক অবকাঠামো ডুবে যাওয়ায় সিলেট অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ সেবা ব্যহত হয়। সে প্রসঙ্গ ধরে ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে ডিসিদের তরফ থেকে সম্মেলনে প্রশ্ন এসেছে বলে জানান মন্ত্রী।
বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে ফাইভ-জি সেবা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমরা পুরোপুরি ফাইভ-জিতে চলে যেতে পারতাম। সে লক্ষ্যে প্রস্তাব আমরা একনেকে নিয়েও গিয়েছিলাম। এর জন্য বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা দরকার। ফলে তখন ভেবেছিলাম কিছুদিন পরে আমরা এটা পুরোপুরি চালু করব।
“বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা ফাইভ-জিতে চলে যাব। শিল্পসহ অন্যান্য উন্নয়নের জন্যও ফাইভ-জি অত্যাবশ্যক। কেউ আমাদের দেশে আসে, বলে, রোবট ফ্যাক্টরি করব, সে যদি ফাইভ-জি সুবিধা চায়, আমাদের দিতে হবে।“
মোবাইল ফোনে বিজয় কি-বোর্ড নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “বিটিএসএল একটি শব্দ ব্যবহার করেছে, ‘বাধ্যতামূলক’, এটি বিভ্রান্তিকর। যিনি উৎপাদক অথবা আমদানিকারক, তিনি বাংলা লেখার জন্য বিল্ট ইন একটি সফটওয়্যার দিয়ে দেবেন। সেখানে বিজয় ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। ব্যবহার করা না করার স্বাধীনতা আছে ব্যবহারকারীর।“