রানির মরদেহ কফিনে শায়িত অবস্থায় যেখানে রাখা, বিপুল মানুষের লাইনে দাঁড়িয়ে সেখানে পৌঁছাতে এখন ২৪ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে, তাই দূরদূরান্ত থেকে এসে কাউকে সে লাইনে যুক্ত না হতে অনুরোধ করেছে ব্রিটিশ সরকার। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এর বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এ খবর জানিয়েছে।
সবচেয়ে দীর্ঘসময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শাসন করা রানির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে, ভালোবাসার অর্ঘ্য দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকার আর ঠাণ্ডার মধ্যেও ধীর, গম্ভীরভাবে এগিয়ে চলা সারিতে থেকে এরই মধ্যে লাখো লোক এলিজাবেথের কফিনের পাশ অতিক্রম করেছেন।
ওয়েস্টমিনস্টার হলে রানির কফিন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর থেকেই সেখানে মানুষের ঢল নামে; এক পর্যায়ে এই লাইন কয়েক মাইল ছাড়িয়ে যায়।
এরই প্রেক্ষিতে শনিবার যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতি বিভাগ জানায়, চাহিদা বেশি দেখা গেলে লাইনে যুক্ত হওয়া বন্ধ করে দেবে তারা; এই নির্দেশনার সঙ্গে রাত ১টার দিকে সংযুক্ত হয়, “দয়া করে দূর থেকে আর আসবেন না।”
গত ৮ সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডের গ্রীষ্মকালীন আবাসস্থলে রানির মৃত্যু যুক্তরাজ্যজুড়ে তীব্র আবেগের সঞ্চার করে; অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে ১০ দিন তার কফিন ঘিরে নানা আয়োজনও রাখা হয়।
তারই অংশ হিসেবে কফিনে শায়িত এলিজাবেথের মরদেহ ২৪ ঘণ্টা স্কটল্যান্ডের রাজধানীতে রাখার পর সেটিকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয় লন্ডনে। লাখো মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত সড়কে, বৃষ্টির মধ্যে পতাকাশোভিত রানির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাকিংহাম প্যালেসে।
শুক্রবার রাতে রাজা চার্লস তার তিন ভাইবোন, প্রিন্সেস অ্যান, প্রিন্স অ্যান্ড্রু ও অ্যাডওয়ার্ডের সঙ্গী হয়ে কফিনের পাশে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
শনিবার উইলিয়াম ও হ্যারিসহ রানির ৮ নাতি-নাতনি আলাদাভাবে ওই কফিনের পাশে অবস্থান নিয়ে সম্মান জানাবেন।
আরও অনেকের মতো ৬০ বছর বয়সী সারা বোনিফেসও শুক্রবার রাতে ওয়েস্টমিনস্টার হল ত্যাগ করার সময় অশ্রুসিক্ত ও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন, কফিনের কাছে পৌঁছাতে তাকে ১৪ ঘন্টা লাইনে থাকতে হয়েছে। তিনি নতুন রাজাকে কফিনের কাছে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখেছেন।
“এর প্রতিটি মিনিট, প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান ছিল। আমি সত্যিই ভাগ্যবান রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছি এবং নতুন রাজাকে দেখতে পেয়েছি,” কান্না আটকে কোনোরকমে বলেন তিনি।