দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন করে আরও দুই লাখ ইভিএম কেনার প্রস্তাবে সরকার সায় দেয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বুধবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইভিএম কেনার ওই প্রকল্প স্থগিত হলেও তাতে তিনি হতাশ নন। এখন যেসব যন্ত্র হাতে আছে, সেগুলো দিয়ে কত আসনে ইভিএমে ভোট করা যাবে, ইসি সব বিবেচনা করে সে সিদ্ধান্ত নেবে।
পরিকল্পনা কমিশন গত রোববার এক চিঠিতে নতুন ইভিএম কেনার প্রকল্পটি স্থগিত করে দেওয়ার কথা জানায়। এর তিন দিন পর প্রথমবারের মত সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললেন সিইসি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, প্রকল্প স্থগিতের পরপরই কমিশনের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। কাজেই ‘একই কথার পুনরাবৃত্তি’ করতে চান না তিনি।
“এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়, হতাশার কিছু নেই। একটা সিদ্ধান্ত এসেছে- সার্বিক অর্থনীতির কারণে সরকার ইভিএম দিতে পারছে না। এখানে আমাদের রিঅ্যাকশনের কিছু নেই।”
তিনি বলেন, “পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাপ্যতা সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট হবে। এখানে (পরিকল্পনা মত না হওয়ায়) হতাশ হওয়ার প্রশ্নই আসে না।”
আগামী নির্বাচন আয়োজনের যে পরিকল্পনা ইসি সাজিয়েছে, তাতে অর্ধেক সংসদীয় আসনে (১৫০টি) ইভিএমে ভোটগ্রহণের ভাবনা ছিল। সেই লক্ষ্যে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ লাখ ইভিএম ক্রয় ও ব্যবস্থাপনার জন্য গত বছরের অক্টোবরে এ প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু পরিকল্পনা কমিশন থেকে চিঠি দিয়ে ইসিকে জানানো হয়, ইভিএম প্রকল্পটি এবার হচ্ছে না। তাতে সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোট করার পরিকল্পনাও কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সেদিন বলেন, “ইভিএম প্রকল্পটির বিস্তারিত পরীক্ষা নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে এবং বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সরকারের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় আপতত প্রক্রিয়াকরণ না করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।”
কমিশনের হাতে এখন অন্তত দেড় লাখ ইভিএম রয়েছে। এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য ইভিএম দিয়ে ৫০ থেকে ৭০টি আসনে ইভিএমে ভোট হতে পারে।
সে প্রসঙ্গ ধরে কাজী হাবিবুল আউয়াল বুধবার বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিইনি এখনও। আমাদের কাছে যে ইভিএম আছে, তা যদি কার্যকর থাকে, আমরা কিউসি করছি, যতটা সম্ভব নির্বাচন করব। এ বিষয়টা এখনও নিশ্চিত নই। কত আসনে ইভিএমে হবে, সে সিদ্ধান্ত পরে হবে।”