মিয়ানমারে নতুন করে সংঘাতে আরও শরণার্থী আসার ক্ষেত্র তৈরি করলেও নতুন করে কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে না দেওয়ার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির কাউকে আর ঢুকতে দেব না। যে পরিমাণ রোহিঙ্গা আমাদের দেশে রয়েছে, আমরা নিজেরাই এখন তাদের নিয়ে নানা ধরনের জটিলতায় রয়েছি। তাই আর কোনো রোহিঙ্গাকে আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেব না।” খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
মিয়ানমারে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে মুসলিম রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। ২০১৭ সালের আগে এই সংখ্যা চার লাখের মতো ছিল।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযান শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।
সব মিলিয়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার অধিকাংশই সীমান্ত জেলা কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন। বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর ভার বহন কষ্টকর হয়ে ওঠার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
এর মধ্যেই গত অগাস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘাত বেঁধেছে রাখাইন প্রদেশে। ফলে আবারও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় খুঁজতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে- সোমবার পুলিশের বিশেষায়িত অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পেয়ে তা জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা মনে করি, মিয়ানমার তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য নানান ধরনের যুদ্ধে জড়িত হয়েছে। এটা তাদের নিজেদের সমস্যার জন্য, আমরা এখনও সঠিকভাবে জানি না, তারা কার সঙ্গে গোলাগুলো করছে। কিংবা কাকে তারা প্রতিহত করছে। আমরা যেটুকু শুনেছি, আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের (মিয়ানমার) বিরোধ। সেই বিরোধের জের ধরেই তারা গোলাগুলি করছে।”
মিয়ানমারের এই সংঘাতের বলি সীমান্তের বাংলাদেশিরাও হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে গোলা এসে পড়ছে বাংলাদেশের ভেতরে। তাতে এখন অবধি একজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা এজন্য মিয়ানমারের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। তাদের অ্যাম্বাসেডরকে তলব করে তার কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
প্রতিবাদে কাজ না হলে জাতিসংঘেও তা তোলা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি প্রতিবাদেও কাজ না হয়, তাহলে আমাদের জাতিসংঘ রয়েছে, সেখানে আমরা আমাদের অসুবিধার কথা উত্থাপন করব।”
তবে বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের পক্ষপাতি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ দেশ। শান্তি বিঘ্নিত হোক, তা চাই না। আমরা সবসময় শান্তিতে থাকতে চাই।”